Monday, July 21, 2014

বাঙালীর রঙিন চশমা আর বাস্তব জীবন, পার্থক্য কতদূর?




এটা আমার একটা ক্ষুদ্র জীবনের অবজারভেশন যে আমরা বাঙ্গালীরা আম এবং ছালা দুটো হারিয়ে হায় হায় করে অভ্ভস্থ্য। ২০-২২ বছরে আমাদের যদি আনন্দের জীবন ধারণ করার সুযোগ থাকে তখন আমরা টাকা কামাতে দৌড়াই আর বিদেশীদের দেখে বলি "ওরাতো উন্নত জাতি, ওরা সুযোগ পাবেনাতো করা পাবে", এটা একটা সর্বাঙ্গীন ভুল ধারণা। কারণ আমরা অলস জাত সব কিছু রেডিমেড পেতে শিখিয়ে গেছে আমাদের ভূতপূর্বরা।
 

 
 
 আপনি নিজেই ভাবেন আপনি যদি আজ ত্রিসর্দ্ধ বা চল্লিশোর্ধ হন, ২০ বছর বয়সে আপনার যা খেতে চাইতো বা করতে পারতেন এখন যদি দেওয়া হয় আপনি কতক্ষণ তা পারবেন? এমনিতেই বাঙালি খেয়ে মরে অভস্থ্য, তার ওপর মরার ওপর খাড়ার ঘা!!!!
 


যেমন এখন আপনাকে যদি সম্পূর্ণ একটা বৈরী পরিবেশে নামিয়ে দেওয়া হয় আপনি চেষ্টা করবেন কিভাবে অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে উদ্ধার পাওয়া যায় আর ২০ বছরের তরুণ একই কাজ করবে সেই সাথে পরিবেশের সাথে অল্প অল্প করে মিশে যাবে। তেমনই আপনার যেই সিনেমা, যেই বই, যেই গেম, যেই পোশাক, যেই খাবার, যেই ডিস্কো, যেই গান, যেই জায়গাগুলো তখন ভালো লাগতো আজ সেগুলো আপনি সহ্যই করতে পারবেন না। কারণ আপনার বয়সের সাথে সাথে আপনার স্বাদেরও বদল হয়। আরো দশ বছর পর আবারও একটা বদল হয় আর এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। আমরা বাঙালিরা কেন ২০এ যা পাইনি টাকার ক্ষমতা থাকলে তা ৪০এ করার অনর্থক চেষ্টা করে হাস্যরসের উত্পাদন করি? টাকার অভাব থাকলে সেটার সাথে মানিয়ে নিয়ে চলতে জানতে হবে কিন্তু কিন্তু আজব রকমের অফট্র্যাক কেন?
 


যেমন কিছু ব্যবসায়ী/কর্পোরেট আমলা চোখে পরে যারা হয়ত পিতামাতার চাপে ২৫এ বিয়ে ২৮এ বাচ্চা কিন্তু টাকা কামাতে কামাতে তার পুত্র কন্যা টিনেজার হয়ে গেল। রাতদিন ভেবে স্ত্রীকে সব কিছুর জন্য দায়ী করে বাইরে যেয়ে এখন ফুর্তি করাটাই অতি বুদ্ধিমানের কাজ মনে হলো। কেন? টাকা থাকলেতো নিজেদের নিয়েও ফুর্তি করা যায় স্ত্রী পুত্র নিয়ে সেটা কেন ভাবে না? তারপর আসি চিরচারিত টাকা জমানোর অভ্যাসে। পোলাপানকে সারাজীবন একটাই খোটা দেওয়া "তোদের আরামের জন্য খেয়ে না খেয়ে টাকা জমালাম আর তোরা আমাকে এখন দেখিস না", ঐখানেই থামেন ভাইসাব অর ম্যাডাম।


 টাকা জমানোর বুদ্ধি আপনার আপনার সন্তানের নয়। তাকে আপনি দুনিয়াতে এনেছেন সে নিজে আসে নাই কাজেই এখন এসব ঢং এর কথা কেন? আর নিজেরা সময় থাকতে কেন ভালো খাননি কেন পরেননি? মাথার ওপর ছাদের জন্য? সেটাও আপনার নিজের ব্যাপার। DO NOT GIVE A GUILTY FEELING TO YOUR CHILDREN


দুনিয়াতে সবাই আসে একা যাবেও একা। বরং গাদা গুচ্ছের টাকা জমিয়ে রেখে আপনি আপনার সন্তানকে একরকম লোভের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন যার নজির আসে পাশে প্রচুর পাবেন। বাস্তববাদী স্বপ্ন দেখুন যা সফল করা যায়। কোনো বড়লোকের মেয়েকে বিয়ে করে যৌতুক নিয়ে বড়লোক হওয়া যায় না কারণ বড়লোকরা গাধা হলে তারা তাদের জায়গায় থাকত না। আবার বড়লোক ছেলেকে বিয়ে করে বিলাসী জীবন যাপন করার স্বপ্ন দেখা ভালো কিন্তু তার সাইড এফেক্ট গুলোও মনে রাখতে হবে। জীবনে কম্প্রমাইজ করে চলতেই হবে কিন্তু কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয়। আপনি মিডল ক্লাস হলে তেমন থেকেই ভালো খেয়ে পরে থাকা যায় ঋণ না করেও। আপনি লোঅর মিডল ক্লাস হলে সেখানেও অনেক অপশন আছে।নিজের ক্লাসের সাথে মিশুন জীবন অনেক সহজ হবে লোভ সহজে বাড়বে না তার মানে এই না যে ভালো থাকার লোভ না বাড়লে আপনার উন্নতির ইচ্ছা নষ্ট হয়ে যাবে। ভালো থাকা পড়া খাওয়ার ইচ্ছা জন্মগত। তাই বাস্তব যত তাড়াতাড়ি মেনে নেবেন তত ভালো থাকবেন। সময়েরটা সময়ে করুন। অন্যকে নিজের জীবনের জন্য দোষী ঠাউরাবেন না। চোখ থেকে রঙিন চশমা খুলুন। উন্নত দেশগুলোর ২৫ বছরের যুবক আমাদের দেশের মধ্য বয়স্কের সমান বুদ্ধি রাখে কারণ তারা বাস্তববাদী। কিন্তু তাই বলে কি তারা জীবন উপভোগ করা বাদ দিয়েছে? মনে রাখবেন দুনিয়াতে সবাই স্বার্থপর কাজেই কারো কাছ থেকে বেশি কিছু কখনই আশা করবেন না কারণ সবাই দুনিয়াতে এক বারই আসে আর এক বারই চলে যায়।

 
GOOD LUCK :)
 
 
Love

Jessica